বিশ্বজুড়ে চলছে করানো প্রাদুর্ভাব। অন্য দেশগুলোলোর মতো আমাদের দেশেও বিভিন্ন স্থানে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও এর ব্যতিক্রম নয়।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের অফিস কার্যক্রম বাসা থেকে অনলাইনে পরিচালনা করছে আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের পাঠদান কার্যক্রম, এছাড়াও ব্যাংকিং সেবা, ই-কমার্স, সফটওয়্যার, কলসেন্টার, স্বাস্থ্য সেবাসহ সরকারি-বেসরকারি সকল সেবা এখন ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল।
দেশজুড়ে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে আসছে ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড সার্ভিস প্রোভাইডাররা। করোনার প্রদুর্ভাবে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনায় হিমশিম খাচ্ছে। তাদের কার্যক্রম অব্যহত রাখতে এই মূহুর্তেই সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা। এ বিষয়টি নিয়ে দৈনিক ইত্তেফাকের সঙ্গে কথা হয় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)’র সেক্রেটারি জেনারেল মো. ইমদাদুল হকের সঙ্গে। তিনি সদ্য সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরতে গিয়ে বলেন,‘দেশজুড়ে ইন্টারনেট সেবা কার্যক্রম অব্যহত রাখতে এখনই সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তা না হলে খুব দ্রুত বন্ধ হয়ে যাবে এ সেবা।’
ইমদাদুল হক আরো বলেন, আমারা যাদের সার্ভিস দিয়ে থাকি তদের ৩০ শতাংশ হলো কর্পোরেট ইউজার ও ৭০ শতাংশ হোম ইউজার। ৭০ শতাংশ হোম ইউজার হলেও আমাদের ৭০ শতাংশ রেভিনিউ আসে কর্পোরেট ইউজার থেকে। আবার কর্পোরেট ইউজাররা সবাই পোস্টপেইড ইউজার। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ অফিস তাদের কর্পোরেট কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। আবার অনেক অফিসে বিল আনতে পাঠানো আমাদের সম্ভব হয়নি। এতে করে আমাদের রেভিনিউয়ের ৭০ শতাংশ এই মূহুর্তে অনাদায়ী থাকছে। একই সঙ্গে আমাদের ব্যান্ডউইথ খরচ বেড়েছে। আগে আমাদের ১৪০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করা হতো যা এখন ১৭০০ জিবিপিএস-এ দাড়িয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। অধিকাংশ সেবাদাতারা গতমাসের বিল সংগ্রহ করতে পারেনি। অনেক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তারা মাত্র ২০ শতাংশ বিল সংগ্রহ করতে পেরেছে। আমরা শুধুমাত্র কর্মীদের বেতন গতমাস পর্যন্ত দিতে পেরেছি। ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি), ন্যাশনালওয়াই টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সামিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) বিল ও অফিস ভাড়া, ইউটিলিটি বিল এখন পর্যন্ত পরিশোধ করতে পারিনি। এর উপর এ মাসের খরচ সামেনে এসে দাড়িয়েছে। এ মাসের বিল তুলতে এখন পর্যন্ত কোনো অফিসে আমাদের কর্মী পাঠাতে পারিনি। এ অবস্থায় হোম ইউজারাও বিল দিচ্ছে না।
আমরা এখন আতঙ্কে আছি আইআইজি ও এনটিটিএন যদি বিলের কারণে তাদের ব্যান্ডউইথ বন্ধ করে দেয় তাহলে আমদের পক্ষে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে না। এ অবস্থায় সরকার যদি আইআইজি ও এনটিটিএনকে সাপোর্ট দেয় ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করতে অথবা ৫০ শতাংশ বিল সহায়তা করে তবে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে একটু সহজ হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের জোর হস্তক্ষেপ জরুরি, বলেন ইমদাদুল হক।
ইমদাদুল হক আরো বলেন, ভ্যাট কর্মকর্তারা আমাদের ভ্যাট চালান জমা দেওয়ার তাগিদ দিচ্ছে। যেখানে আমরা অফিস ভাড়া, কর্মীদের বেতন, ইউটিলিটি বিল দিতেই হিমশিম খাচ্ছি সেখানে ভ্যাট চালান জমা দিবো কোথায় থেকে? ভ্যাট কর্মকর্তারা বলছে, আপনারা এখন ভ্যাট চালান জমা না দিলে আগামীতে জরিমানা হবে। এ অবস্থায় আমাদের দাবি হলো- আগামী ছয় মাস আমাদের ভ্যাট কার্যক্রম স্থগিত রাখা হোক। আর স্বল্প সুদে যে লোন প্রদান করার ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন তার কার্যক্রম অতিদ্রুত শুরু করা হোক। এ কার্যক্রম বিলম্ব হলে আমরা কর্মীদের বেতন-ভাতা প্রদান করতে ব্যর্থ হবো আর এতে করে কর্মী ছাঁটাই শুরু হবে। এ খাতে ৫ লাখ কর্মী কাজ করছে। কর্মী ছাঁটাই শুরু হলে অন্তত দেড় থেকে দুই লাখ লোক বেকার হবে।
Source: https://www.ittefaq.com.bd/144941/%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%9F-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A6%BE-%E0%A6%85%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%A4-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%96%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A7%8B%E0%A6%B0-%E0%A6%B9%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A7%87%E0%A6%AA